Wednesday, March 12, 2008

বাংলাদেশ ক্রিকেটঃ কিছু প্রস্তাবনা


সব ক্রিকেট দর্শকদের একটা বদ্গুণ আছে যেটা হল তারা ভাল খেললে আনন্দে সবাইকে আকাশে তুলে দেয় আর খারাপ খেললে সাথে সাথে মাটিতে নামিয়ে দেয়। আমি নিজেকে তার থেকে ব্যতিক্রম ভাবতাম। জিতে গেলে আমি অসম্ভব খুশি হই কারণ আমি আর সবার মত বাংলাদেশের সামর্থ্য বিশ্বকাপ জিতে যাওয়ার মত এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী নই। তাই আমি জিতে যাওয়াটাকে অনেক অসম্ভব ভেবেই খুশি হই। এমন কি দুর্বল দল গুলার সাথে খেলার সময়ও আমি অনেক চিন্তিত থাকি। দুই বিশ্বকাপে কানাডা এবং আয়ারল্যান্ড এর সাথে হার আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমার বড় ভাই আয়ারল্যান্ড থাকে। তাকে পোহাতে হয়েছে আরো কষ্ট। অস্ট্রেলিয়ায় যারা থাকে তাদের কাছে শুনেছিলাম তারা কেমন ভাবে অস্ট্রেলিয় দের বলেছিল আমরা তোমাদের হারিয়েছি সেই কার্ডিফের পরে। আমি আমার বড় ভাইয়ার কাছে শুনলাম তার উলটা কাহিনী। সেখানে এটা একেবারেই নতুন খেলা। তাই আমাদের সাথে জেতার পর তারা বলেছে ভাইয়াকে আমরা তো প্রথম এসেই পাকিস্তান আর তোমাদের হারিয়ে দিলাম। আগামীবার হয়ত আমরা বিশ্বকাপ ই জিতে যাব। হায় আল্লাহ!! এরা দেখি আমাদের মতই স্বপ্ন দেখে।
যা হোক আজ খেলা দেখতে বসেছিলাম। ২৩-৪ এই অবস্থায় আমি আর ধৈর্য রাখতে পারলাম না। এতদিন যে কোন বিপর্যয়ে আমি আশা রেখেছি পাশে ছিলাম। আজ আমি দর্শক হিসেবে রিটায়ার করে ফেললাম। তবে তার আগে কিছু প্রস্তাবণা দিয়ে যাই। বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ম্যাচ আগে খেলা কিংবা টেস্ট এর ২য় ইনিংস আগে করা এগুলা খুবই জনপ্রিয় ধারণা। সেই সাথে আমার কিছু চিন্তাভাবনা যোগ হোক।
১। ক্যাপ্টেন্সি বাংলাদেশ দলে বড় একটা সমস্যা। এমন কি ভাইস ক্যাপ্টেন ও। তার প্রমান যত ভাইস ক্যাপ্টেন আছে তারা। রাজিন, শাহরিয়ার নাফিস থেকে শুরু করে হালের মাশরাফি তার প্রমাণ। তাই আমার প্রথম প্রস্তাবনা বাংলাদেশ দলে থাকবে নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন ভাইস ক্যাপ্টেন। ফিল্ডিং এর ১০ ওভার পরেই একজন ব্যাটসম্যানকে সরিয়ে ক্যাপ্টেন মাঠে নামবেন। আর ব্যাটিং এর সময় তো কোন সমস্যা নাই।
২। টিভিতে খেলা দেখালে নাকি আমাদের প্লেয়ারদের উপর খুব চাপ পড়ে। তাই বাংলাদেশের খেলা সম্প্রচার এর দায়িত্ব দেওয়া হোক এমন কোন চ্যানেলকে যেটা দেশে দেখা যায় না। আর বিটিভি খেলার কোন হাইলাইটস ও যেন না দেখায়।
৩। বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে দুর্লভ জিনিস হল ধারাবাহিকতা। তাই একজন প্লেয়ার যখন একটা ফিফটি মেরে দিবে এটা শিউর হয়ে যাওয়া যায় পরের দিন তিনি ডাক না মারলেও ১০ করতে পারবেন না। তাকে তখন পরের ম্যাচে বসিয়ে দিতে হবে। (যেমন আজ তামিম ডাক মেরেছে)
৪। যে নিয়মিত খারাপ খেলবে তাকে বানিয়ে দিতে হবে দ্বাদশ প্লেয়ার। দলের সাথে ঘুরে বেড়াবে খেলতে পারবেনা। একদিন হঠাৎ করে চান্স দিলে সে সেঞ্চুরী মেরে দিবে। (যেমন রাজিন মেরেছিল )
৫। প্র্যাকটিসে ব্যাটসম্যানের অফ সাইডে এমন ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সেদিকে ব্যাট না যায়। দেওয়াল তুলে দেওয়া যেতে পারে। অফ স্ট্যাম্প সজোরে চালানোর প্রবণতা রোধের জন্য।
আরো অনেকগুলা প্রস্তাবনা ছিল আমার। কিন্তু হঠাৎ কালকের একটা কথা মনে পড়ে গেল। মাশরাফি নাকি প্র্যাকটিস দেখতে আসা জনৈক ক্রিকেত ভক্ত কে বলেছে পারলে আসেন আপনি ক্রিজে এসে খেলেন। এখন আমাকেও যদি কেউ সেটা বলে তাহলে চুপ থাকা ছাড়া কিছু করতে পারবনা। তাই এখানেই শেষ করে ফেলি।
[[ ডিসক্লেইমারঃ এই লেখাটা এক ভগ্ন হৃদয়ের ক্রিকেট ভক্তের মাথা গরম লেখা কেউ এটাকে সিরিয়াস লেখা হিসেবে নিলে লেখক দায়ী নয়। ছবিটি ক্রিকইনফো থেকে নেওয়া ]]

No comments: