Wednesday, January 14, 2009

প্রবাসে প্রলাপ - ০০১

রবি, ৪/০১/০৯ – ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

একটা শীতের বন্ধ শেষ করলাম। আজ ছুটির শেষ দিন তাই মনটা বড়ই উশখুশ করছে। ছুটি শেষের অনুভূতি মনে হয় সবারই একরকমই হয়। কিন্তু ছুটি শুরুর অনুভূতিগুলো বিদেশে যারা থাকে তাদের একটু অন্যরকম। এবার যেমন ছুটি শুরু হবার আগে ভাবছিলাম কি যে করি। ছোট্ট একটা ছুটি খুব বেশি কিছু করার ও নেই। প্রতিটা ছুটির আগে যেমন নিজের টাকা পয়সা মিলিয়ে দেখি দেশে যাওয়া যাবে কিনা এবারও তেমন। যদিও জানি বছরে দুইবার দেশে যাবার সামর্থ্য এখনো হয়নি তাও এই যাব যাব ইচ্ছেটা তাড়াতে পারিনা। বাংলাদেশের খেলা আছে তাই ভাবলাম শুয়ে শুয়ে বাংলাদেশের খেলা দেখে দেখেই ছুটি কাটাব। কিন্তু বড়ই আচানক ভাবে একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে গেল তাই আর আমাকে বোরিং ভাগে ছুটি কাটাতে হল না। বেশ মজাই হল বলা যায়। লাষ্ট ১০ দিনের এক রাত ঠিকমত ঘুমিয়েছি। আর প্রতিদিনই ঘুমাতাম ভোর ৬টায়। রাত জুড়ে আড্ডা মারা আর খেলা। আগে রাত জুড়ে আমরা কার্ড খেলতাম। কিন্তু ইদানিং আমাদের আড্ডাতে মানুষ এত বেশি হয় কার্ড খেলা আর হয়ে উঠে না । কার্ড খেললে অনেককেই বসে থাকতে হয়। আড্ডা দিতে দিতে যখন সকাল হয়ে যায় তখন ঘুমাতে গেলে কেমন যেন একটা খারাপ লাগায় আক্রান্ত হই আমি। পৃথিবী জুড়ে মানুষ যখন ঘুম থেকে উঠছে আমি তখন ঘুমাতে যাচ্ছি।
যে বাংলাদেশের খেলা দেখে দিন পার করব বলে ঠিক করেছিলাম তা আর দেখা হল না সেইরকম ভাবে। যদিও এরই মাঝে বাংলাদেশে প্রথম টেষ্ট এ খুবই ভাল খেলা দেখিয়ে দিল ভেবেছিলাম বুঝি জিতেই যাবে তাও যা করেছে তাই বা খারাপ কি। আমার ছুটির মধ্যে আরেকটা যেটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে গেল তা হল বাংলাদেশের নির্বাচন। সবার পূর্বধারণা মত আওয়ামীলীগ প্রচুর আসন পেয়ে গেল। তাতে আবার আমি একটু শংকিত হয়ে উঠলাম। এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা অনেক সাবধানে অনেক ভাল ভাল কথা বলছেন। জানিনা সত্যি সত্যি তিনি এইসব ধরে রাখতে পারবেন কিনা। পাহাড় সমান আসন পেয়ে তিনি কিন্তু পাহাড় সমান চাওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এ কথা কি তিনি বুঝতে পারছেন কিনা কে জানে ? এই ৫ বছর আমাদের জাতির জন্য একটা বিশাল গুরুত্বপূর্ণ সময় বলেই আমার মনে হয়। আমাদের রাজনীতির চরিত্র বদলের এইটাই সময়। শুধুমাত্র প্রয়োজন সবার সদিচ্ছা এবং গত ২ বছরের শিক্ষা। কিন্তু ভয় লাগে কুকুরের লেজ নাকি ১০ মন ঘিয়েও সোজা হয় না।
একটা জিনিসে শান্তি পেলাম এরশাদ প্রেসিডেন্ট হবে না জেনে। এরশাদ প্রেসিডেন্ট হবে এটা আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমাকে একজন জিজ্ঞেস করেছিল অন্য যারা হবে তারা কি এরশাদ থেকে ভাল কিনা। কিন্তু আমি খুবই ইমোশনাল। রাজনীতি সম্বন্ধে আমার বুদ্ধি হওয়ার পরের প্রথম ঘটনাই হল ৯০ এর গণ আন্দোলন। তখন থেকেই অল্প অল্প করে আমি স্বৈরাচার সম্বন্ধে জেনেছি। তাই আমি কখনো মেনে নিতে পারি না সেই এরশাদ আবার প্রেসিডেন্ট হবে। প্রেসিডেন্টের তেমন কোন ক্ষমতা নেই এটা জেনেও এরশাদ যেমন ঘাউরামি করে ওটা হতে চায় আমিও তেমনই ঘাউরামি করে ও প্রেসিডেন্ট হবে এইটার বিপক্ষে। রাজাকার দের বিচার আসলেই হবে কিনা তা আমি জানিনা কিন্তু একভাবে সামাজিক বিচার তাদের হয়েছে বলেই আমার ধারণা। এইভাবে আমরা সামাজিক ভাবেই রাজাকারদের বিতাড়িত করতে পারব আমাদের সমাজ থেকে । অনেকের কাছেই শুনি এত বছর পর রাজাকার ইস্যু টা ব্যবহার না করে সবাই মিলে দেশ গড়াই নাকি লক্ষ্য হওয়া উচিত। আমি এটাও মানতে পারিনা। রাজাকার কে এখনো আমি আমার দেশের একজন মানতে পারি না।
অনেক বকে ফেললাম। আজ নাহয় বন্ধ করি।

No comments: