Sunday, May 18, 2008

আপুসোনা ---৪


-কিরে তপু বসে আছিস যে একা এখানে?
-তোমার জন্যই তো বসে আছি আপুমনি।
-কেন রে তোর বন্ধুরা কোথায়?
-ওরা তো চলে গেছে।আমার তো সেই ২টায় ক্লাস শেষ হয়ে গেছে।তোমার routineদেখে তোমার জন্য বসে আছি আমি।
-ধূর গাধা। আমি তো রাতে তোকে ফোন দিবই।
-নারে আপুমনি তোমার কথা এত মনে পড়ছিল যে একটু দেখা না হলে ভালই লাগত না।
-তুই একেবারে পাগল একটা পিচ্চি।
-আরো পিচ্চি হলে ভাল হত।
-কেন রে?
-তোমার আর কাছে কাছে থাকতে পারতাম। কে কি ভাবল ওইটা care করতে হতনা।
-কিইবা এসে যায় বল মানুষজন কি ভাবল না ভাবল।তুই আমার ছোটভাই এটা তুই আর আমি জানলেই তো হল তাইনা।
-আপুমনি এ কথা টা তোমার সবসময় মনে থাকবে তো?সবসময় আমাকে এরকম ভাবে আদর করবি তো আপুমনি?
আস্তে করে তপুর মাথার চুলে একটু হাত বুলিয়ে দেয় লাবণী।পাগলটা কি জানে, যে গতকাল রাতে ও যে সারাক্ষণ ওর কথাই ভেবেছে?ঠিক এসময় ওর গাড়ীটা চলে আসে।
-যাইরে পিচ্চি।
-আপু শোন, ডাকে তপু।
-এইটা রাখ বাসায় গিয়ে খুলে দেখবে। একটা খাম এগিয়ে দেয় তপু।
অবাক লাবণী কিছু বুঝে উঠার আগেই তপু চলে যায়।
বাসায় ফিরে fresh হয়ে এসে নিজের খাটে শুয়ে খামটা খুলে পড়তে শুরু করে লাবণী। সারাটা রাস্তাই ভাবছিল কি লিখেছে পাগলটা

লাবণী আপু
কেমন আছ আপু?খুব অবাক হয়েছ চিঠিটা পেয়ে? তোমার মন খারাপ ভাব কমেছে আপু?তোমার যে কারণে মন খারাপ ঐটা তো আমি ঠিক করতে পারবনা। তোমাকে যে কাল বললাম তমার মন ভাল করে দিব তার জন্যই এই বুদ্ধি।চিঠি পেলে আমার খুব ভালো লাগে। তোমার ও ভালো লাগবে আশা করি। আমার একটা শখ হল মানুষকে চমকে দেয়া। হঠাত করে চিন্তার বাইরে কিছু হলে মানুষ কেমন খুশী হয়ে উঠে ঐটা কল্পনা করতে আমার খুব ভাল লাগে।
আমার না ছোটবেলা থেকেই একটা বড়বোনের খুব আফসোস। আমি কত কল্পনা করি আমার একটা বড় বোন থাকলে এইভাবে আমাকে আদর করত। তুমি কি কখনো ভেবেছ তোমার যদি একটা ছোটভাই থাকত তাহলে তুমি কি করতে? যদি নাও ভাব এখন ভাব কারণ তোমার একটা ভাই হয়েছে তাইনা আপু?
আমি ক্লাসে বসে বসে তোমাকে চিঠি লিখছি। বিকেল বেলা তোমাকে দিব। ইচ্ছে করছে বিশাল একটা চিঠি লিখি।পড়তে পড়তে তোমার যেন শেষই না হয়। আপুমনি আমার , তুমি ভালো থেকো অনেক অনেক বেশি ভাল।একটু ও মন খারাপ করবা না কখনো। সারাটা চিঠি জুড়ে শুধু আমার কথাই লিখলাম তোমার কথা কিছু জিজ্ঞেস করা হলনা।মন কি একটু হলেও ভাল হয়েছে আপু?
তপু

চিঠি পড়তে পড়তে চোখটা ভিজে উঠল লাবণীর।এত ভাল লাগছে ভেজা চোখ টা মুছতেও ইচ্ছা করছে না। কেউ একজন ওকে নিয়ে ভাবছে মন ভালো করে দেওয়ার জন্য ক্লাসের ফাঁকে চিঠি লিখছে।ভাবতেই কেমন জানি লাগছে ওর।বহুদিন পরে ভালবাসার response পেল ও।কি করা যায়। মনে মনে ডাকল পিচ্চিটাকে।“তুই কিভাবে বুঝলি রে চিঠি যে আমার এত পছন্দ। আমি যাকে পছন্দ করি তাকে limit ছাড়িয়ে ফেলি পছন্দ করতে করতে।মাঝে মাঝে মনে হয় এই জন্যই বুঝি পছন্দের মানুষটা পাত্তা দিচ্ছেনা বিরক্ত হচ্ছে। হয়তবা বেশি ভালবাসি বলেই care করছে না।একথা ভেবেই মন খারাপ ছিল রে।তুই তো একেবারে reverse way তে আমার মনটা ভাল করে দিলি।
-লাবণী খেতে আস।বেশিক্ষণ কথা বলা হল না খাওয়ার ডাক চলে আসল।খেতে বসে লাবণীর খুশি ভাব কারো দৃষ্টি এড়ালো না।
-কিরে লাবণী কয়দিন মন মরা করে ছিলি আজ দেখি বেশ খুশি খুশি।
মায়ের কথার কোন জবাব দিল না লাবনী।চুপচাপ খেয়ে উঠে নিজের রুমে এসেই মোবাইল এ রিং দিয়ে দিল

No comments: